শিরোনাম
নিজস্ব প্রতিবেদক | ০৭:১৮ পিএম, ২০২০-১১-০২
সরকারের সিদ্ধান্ত ও ব্যবসায়ীদের কার্যক্রম সাংঘর্ষিক না করতে আলুর দাম কেজিপ্রতি ৫ টাকা বাড়িয়েছে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। এরপরেও দামের নাগাল পাচ্ছে না ক্রেতারা। দাম বাড়িয়ে আলুর মূল্য পুনঃনির্ধারণ করায় ব্যবসায়ীরা মজুদ ও সরবরাহ সংকটের অজুহাতটা আরো দৃঢ় করার সুযোগ পেয়েছে। ক্রেতাদের জিম্মি করে বাজারের অস্থিরতা কমাতে প্রশাসনকে কঠোর হবার দাবি জানিয়েছে ক্যাব।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য ও কৃষি মন্ত্রীর পর্যালোচনা করে দেখা যায়, চাহিদার তুলনায় দেশে প্রায় ৪০ লাখ টন বেশি আলু উৎপাদন হয়েছে। তারপরও নতুন মৌসুম শুরুর পূর্বমুহূর্তে আলুর দাম বেড়েছে ভালো মানের চালের চেয়েও বেশি। অথচ বাজারে আলু না রেখে ব্যবসায়ীরা আলুর মজুদ করেছে কোল্ড স্টোরেজে। অথচ কৃষিমন্ত্রী আলুর দাম বাড়ার জন্য গত মার্চ-এপ্রিল-মে সময়ে করোনায় কর্মহীন মানুষের মাঝে চাল, ডালের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ আলু বিতরণ হওয়াকে অন্যতম কারণ মনে করছেন। আর দরবৃদ্ধির জন্য মধ্যস্বত্বভোগীদের দায়ী করছে কৃষি বিভাগ।
আজ (সোমবার) সকালে নগরীর কর্নেলহাট, অলংকার ও পাহাড়তলী বাজার ঘুরে দেখা যায়, আলু বিক্রি হচ্ছিলো কেজি প্রতি ৪৫-৫০ টাকায়। পাইকারি বাজারে মান ভেদে আলুর কেজি ৪০ থেকে ৪২ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। তবে নতুন দর নির্ধারণে আলুর মূল্যে বৃদ্ধি করায় বেশ কিছু খুচরা দোকানে আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকা। ব্যবসায়ীরা আলুর দাম বৃদ্ধির জন্য মজুদ ও সরবরাহ না থাকার কথা বলছেন। পাশাপাশি তারা এটিও বলছেন, মজুদ না থাকার কারণেই সরকার আলুর মূল্য একবার নির্ধারণ করার পরেও আবার বাড়িয়েছে।
আলী আহমদ নামে অলংকার বাজারের এক দোকানি জানান, এখন তাদের কাছেও পর্যাপ্ত আলুর মজুদ নেই। মজুদ ও সরবরাহ না থাকায় তারাও বাড়তি দামে আলু কিনে আনছে। তাই তাদের বাড়তি মূল্যে আলু কিনে আনতে হচ্ছে। তিনি বলেন, 'আলু নাইদে ইয়ান সরকারেও বুঝের। উদা টেলিভিশনত কদ্দে আলু ফরি থাইক্যে।' (আলু না থাকার বিষয়টি সরকারও বুঝতে পারছে। শুধু সাংবাদিকরা (টেলিভিশন প্রতীকে) বলছে আলু জমা পড়ে আছে।)
বাংলাদেশ কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশনের হিসাবমতে, চলতি বছর ৮৫ লাখ টন আলু উৎপাদিত হয়েছে। তাদের হিমাগারগুলোতে বর্তমানে আলু রয়েছে ৪০ লাখ টন। এর মধ্যে ১৫ লাখ টন বীজ আলু। মাসে দেশে আলুর প্রয়োজন হয় ৮ লাখ টন।
নতুন দর অনুযায়ী, হিমাগার পর্যায়ে আলুর দাম প্রতিকেজি ২৭ টাকা, পাইকারি পর্যায়ে প্রতিকেজি ৩০ টাকা ও খুচরা পর্যায়ে প্রতিকেজি ৩৫ টাকা। অথচ কৃষি বিপণন অধিদফতরের হিসাব অনুযায়ী, এ মৌসুমে একজন চাষির প্রতি কেজি আলু উৎপাদনে খরচ হয়েছে ৮ টাকা ৩২ পয়সা। উৎপাদন থেকে শুরু করে অন্যান্য খরচ ধরে এক কেজি আলু হিমাগার পর্যন্ত সংরক্ষণে সর্বমোট ব্যয় হয়েছে ২১ টাকা। এক্ষেত্রে হিমাগার পর্যায়ে বিক্রয় মূল্যের ওপর ২-৫ শতাংশ লভ্যাংশ, পাইকারি পর্যায়ে ৪-৫ শতাংশ এবং খুচরা পর্যায়ে ১০-১৫ শতাংশ লভ্যাংশ ধরে তারা এই তিন পর্যায়ের দাম নির্ধারণ করেছেন।
আলুর দাম নিয়ে কথা হয় চট্টগ্রাম রিয়াজ উদ্দীন বাজারের আড়তদার মো. ইউসুফ এর সাথে। তিনি বলেন, 'এখন পর্যাপ্ত মজুদ নেই। তাই দাম বাড়তি। এ অবস্থা আরো দুয়েক সপ্তাহ চলবে। তবে আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকেই বাজারে আসতে শুরু করবে নতুন আলু। তাই দ্রুতই দাম সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে।'
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এসএম নাজের খান বলেন, 'ব্যবসায়ীরা তাদের ইচ্ছেমতো ক্রেতাদের জিম্মি করে বাজারের অস্থির করছে। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে বাজার মনিটরিং করা প্রয়োজন। মনিটরিং থাকলে ব্যবসায়ীরা এ সুযোগ পাবে না।
এসপি/
নিজস্ব প্রতিবেদক : গ্রামের সাধারণ জনগণকে সহজে ও কম খরচে সরকারি-বেসরকারি সেবা সহজে পৌঁছে দেওয়ার জন্য দেশের সবকটি ইউন...বিস্তারিত
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত ২০১৯ - © 2022 Satkania Pratidin | Developed By Muktodhara Technology Limited